01841819637

foogonj@gmail.com

Search

Shop

Call

Account

Cart

কালোজিরা ফুলের খাঁটি মধুর ৬ টি বৈশিষ্ট্য

আপনি কি জানেন খাঁটি মধু চেনার সঠিক উপায় কি?

খাঁটি মধু চেনার সবচেয়ে সঠিক উপায় হচ্ছে মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা। যদি আপনি মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে পারেন, তাহলে আপনি ভেজাল মধু থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং খাঁটি মধু চিনে কিনতে পারবেন ইনশাল্লাহ। মধুর বৈশিষ্ট্য বলতে বোঝাচ্ছি- কোন ফুলের মধু কোন এলাকায় উৎপাদন হয়, সেই মধুর রঙ দেখতে কেমন হয়, স্বাদ কেমন হয়, ঘ্রাণ কেমন হয়, ঘনত্ব কেমন হয়, জমে যায় কিনা, ফেনা হয় কিনা ইত্যাদি। এই তথ্য গুলো আপনি যতো বেশি জানতে পারবেন, শিখতে পারবেন, বুঝতে পারবেন, আপনি ততো বেশি খাঁটি মধু চিনতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

আপনি আমার কথা বিশ্বাস করুন আর নাই করুন,  ৬ বছরের বেশি মধু বিক্রির দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, খাঁটি মধু বা ভেজাল/কৃত্তিম মধু চেনার শর্টকার্ট ঘরোয়া কোনো পরীক্ষা নেই। ঘরোয়া পরীক্ষা বলতে বোঝাচ্ছি- আগুন, পানি, চুন, পিঁপড়া, ফ্রিজিং ইত্যাদি পরীক্ষা। আসলে এই পরীক্ষা গুলো দিয়ে খাঁটি বা ভেজাল/কৃত্তিম মধু চেনা সম্ভব নয়। যদি সম্ভব হতো তাহলে দেশে এতো ভেজাল মধু থাকতো না। কারণ এই ধরনের ঘরোয়া পরীক্ষা কম-বেশি আমরা সবাই জানি।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন ফুলের আলাদা আলাদা বৈশিষ্টের মধু উৎপাদন হয়। তার মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত চার প্রকার মধু। চার প্রকার মধু হচ্ছে- সরিষা ফুলের মধু, কালোজিরা ফুলের মধু, লিচু ফুলের মধু এবং সুন্দরবনের মধু। এর মধ্য থেকে আজকে আমি সুন্দরবনের মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

মুল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে আপনাদেরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানা থাকতে হবে। যদি এই বিষয়টি না জানা থাকে তাহলে এই আর্টিকেল থেকে আসলে উপকৃত হওয়া সম্ভব নই। আর সেটি হচ্ছে, Raw Honey এবং Processing Honey এর মধ্যে পার্থক্যটা জানা।

Raw Honey এবং Processing Honey কাকে বলে?

মৌমাছি যে মধু তৈরি করে মৌচাকে জমা করে, সেই মধুই হচ্ছে কাঁচা মধু বা হানি। সেটা গ্রাম গঞ্জের হাতে চাক কাটা মধু হোক বা বাক্সের ভেতরে পোষা মৌমাছি দিয়ে উৎপাদিত মধু হোক। এই দুই প্রকার মৌমাছিই যদি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে, তাহলে এই দুই প্রকার মধুই ভালো মধু, খাঁটি মধু। বাজারে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ মধু প্রক্রিয়াজাত মধু বা Processing Honey। কাঁচা মধু এবং প্রক্রিয়াজাত মধু , এই দুই মধুর মধ্যে স্পষ্ট অনেক পার্থক্য রয়েছে। প্রক্রিয়াজাত করা হয় মধু গরম করার মাধ্যমে। আর মধু গরম করলে মধুর অনেক উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায় এবং অনেক সময় ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে ভালো মানের Raw Honey বা কাঁচা মধু খাওয়ার জন্য।

কালোজিরা ফুলের প্রাকৃতিক RAW মধুর টি বৈশিষ্ট্যঃ

  • দেখতে কালচে রঙের হয়।
  • খেতে একেবারে খেজুরের গুড়ের মত স্বাদ লাগে।
  • ঘ্রাণ টাও খেজুরের গুড়ের সাথে মিলে যায়।
  • মধুর ঘনত্ব কম বা বেশি হতে পারে।
  • মধু পাতলা হলে ফেনা হতে দেখা যায়। আর ঘনত্ব বেশি হলে ফেনা হতে দেখা যায় না।
  • সাধারণত কালোজিরা ফুলের খাটি মধু জমে যেতে দেখা যায় না। তবে ধনিয়া ফুল সহ অন্যান্য ফুলের মধুর মিশ্রনের ফলে অনেক সময় সামান্য জমতে দেখা যায়।

কালোজিরা ফুলের মধু কখন এবং কিভাবে সংগ্রহ করা হয়?

বাংলাদেশে কালোজিরা ফুলের মধু সংগ্রহের সময় সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে। মাঠে যখন প্রচুর পরিমাণে কালোজিরা ফুল ফুটতে শুরু করে, তখন মৌ চাষিরা তাদের মৌ বাক্স গুলো কালোজিরার বিশাল বড় ক্ষেতের পাশে স্থাপন করে। তারপর ফুল বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথেই মৌমাছিরা ওই এলাকা থেকে মধু সংগ্রহ করে তাদের মৌ বাক্সে জমা রাখে। এভাবেই তৈরি হয় সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক কালোজিরা ফুলের খাঁটি মধু

কালোজিরা ফুলের RAW মধু তে কেন ফেনা হয়?

কালোজিরা ফুলের প্রাকৃতিক Raw মধুতে অনেক সময় ঝাঁকি লাগলে ফেনা হতে দেখা যায় ও সম্পূর্ণ মধু সাদা রঙের হয়ে যেতে পারে। যা দেখে একজন সাধারণ মধু ক্রেতা, মধু খাঁটি হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেন। কিন্তু এই সন্দেহ টি একেবারেই সঠিক নয়। নিচে তার Scientific ব্যাখ্যা দেওয়া হলঃ

কালোজিরা ফুলের প্রাকৃতিক Raw মধুতে অ্যাক্টিভ এনজাইম, প্রোটিন এবং অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। এবং মধু একটি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পদার্থ যাতে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে। আর গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ- কার্বন, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত। এ জন্য কালোজিরা ফুলের প্রাকৃতিক Raw মধুতে যদি ময়েশ্চারের পরিমাণ বেশি থাকে, অর্থাৎ মধুর ঘনত্ব কম হয় বা মধু পাতলা হয় এবং মধু যদি ঝাঁকি লাগে, তখন মধুর মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি করে। এতে মধুর মধ্যে বায়ু বুদবুদ সৃষ্টি হয় এবং একই সাথে মধু ফেনা হতে দেখা যায় ও পাত্রের ভেতরে গ্যাস হতে পারে, যার ফলে প্ল্যাস্টিক এর বোতল কিছুটা ফুলে যেতে পারে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- ফেনা কম বা বেশি হবে ময়েশ্চারের পরিমাণ কম-বেশির কারনে। তবে মধু যদি খুবই ঘন হয় অর্থাৎ ময়েশ্চারের পরিমাণ কম থাকে তাহলে ফেনা হবে না। মধুতে ফেনা তৈরি হলে সেটাকে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রেখে দিলে আবার সেই ফেনা মধুতে পরিণত হবে। এতে মধুতে কোন ক্ষতি বা সমস্যা হবে না।

উপসংহার

যতটা সম্ভব খুব সহজে মুল বিষয়গুলো বোঝানর চেষ্টা করেছি। তারপরও একবার পড়ে বুঝতে অসুবিধা হলে দুই তিন বার পড়তে পারেন। তাহলে আরও ভালমতো বুজতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

আমি মনে করি, এই ব্লগ পোস্টে দেওয়া তথ্য গুলো যদি কোনো মধু ক্রেতা ভালোভাবে আয়াত্ত করতে পারে। তাহলে আর কোনো ভেজাল ব্যবসায়ী অথবা প্রতারক, তাকে কালোজিরা ফুলের খাঁটি মধু বলে ভেজাল বা কৃত্তিম মধু দিতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Phone
WhatsApp
Messenger
Messenger
WhatsApp
Phone
Scroll to Top